সর্বশেষ :
সাদাপাথর লুটের ঘটনায় এবার প্রকাশ্য অনুসন্ধানে নামল দুদক

সাদাপাথর লুটের ঘটনায় এবার প্রকাশ্য অনুসন্ধানে নামল দুদক

একুশে সিলেট ডেস্ক

কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে নজিরবিহীন ‘সাদাপাথর’ লুটের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের দায় খতিয়ে দেখতে ‘প্রকাশ্যে’ অনুসন্ধান শুরুর তথ্য দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সাদাপাথর লুটে যাদের যাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে- সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের জন্যই প্রকাশ্য অনুসন্ধান। অনুসন্ধান টিম তাদের কাজ করছে।’

এ বিষয়ে অনুসন্ধান চালাতে কমিশনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। অভিযানের শেষে প্রতিবেদনে তারা অনুসন্ধানের সুপারিশ করেছেন এবং কমিশন এ বিষয়ে পর্যালোচনা করার পর অনুসন্ধান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

আগের অভিযানের প্রতিবেদনের বরাতে সাদাপাথর লুটের পেছনে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনীতিবিদদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে অনুসন্ধান কাদের বিরুদ্ধে হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে দুদকের মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রকাশ্য অনুসন্ধানটি করা হচ্ছে দায়-দায়িত্ব নির্ধারণের জন্য। নথিপত্রের ভিত্তিতে যাদের সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান পরিচালনা করা হবে।’

সংস্থার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মঙ্গলবার দুদকের কমিশন সভায় বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য উত্থাপন করা হলে কমিশন সেটি প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের জন্য সিদ্ধান্ত দেয়।’

সাদাপাথর থেকে পাথর লুট নিয়ে দুদকের এনফোর্সমেন্ট অভিযানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওসিসহ সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যরা অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের কমিশন গ্রহণ করে সাদাপাথর লুটপাটে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছেন।

পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, অন্যান্য ব্যক্তি ও সরকারি প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ৫৩ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়ার তথ্য উঠে আসে ওই প্রতিবেদনে।

১৩ আগস্ট দুদকের সিলেট কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফি মো. নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে একটি দল সাদাপাথর পরিদর্শন করে। পরে তারা ১৬ আগস্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর প্রতি ট্রাকে প্রায় ৫০০ ঘনফুট করে লোড করা হয়। পরিবহন ভাড়া ছাড়া প্রতি ট্রাকের পাথরের দাম ধরা হয় ৯১ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রতি ট্রাক থেকে ১০ হাজার টাকা পুলিশ ও প্রশাসনের জন্য আলাদা করা হয়। বাকি ৮১ হাজার টাকা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীরা নিজেদের মাঝে বণ্টন করে নেয়।

এছাড়া প্রতি ট্রাক থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে পুলিশের জন্য পাঁচ হাজার টাকা এবং উপজেলা প্রশাসনের জন্য পাঁচ হাজার টাকা বণ্টন হত। এছাড়া অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত প্রতিটি বারকি নৌকা হতে এক হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। যার মধ্যে পুলিশ বিভাগ পায় ৫০০ টাকা এবং প্রশাসন (ডিসি ও ইউএনও) পায় ৫০০ টাকা। পুলিশ নির্দিষ্ট সোর্সের মাধ্যমে প্রত্যেক ট্রাক ও নৌকা থেকে এসব চাঁদা বা অবৈধ অর্থ সংগ্রহ করে বলে দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff